#বাসন্তী_পুজো
#চিত্তেশ্বরীদুর্গামন্দিরচিৎপুর৷
আদি চিত্তেশ্বরী দুর্গা মন্দিরটা কলকাতার কাশীপুরের ‘গান-অ্যান্ড-শেল’ কারখানার পাশে অবস্থিত। জনশ্রুতি যে প্রাচীন কলকাতার চিৎপুর (‘চিত্রপুর’) অঞ্চলের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন ‘চিত্তেশ্বরী’/’চিত্রেশ্বরী’। আনুমানিক প্রায় আঠশো বছর আগে #চিতু ডাকাত এই দেবীপূজা শুরু করেন৷ দেবীমূর্তি প্রাচীন হলেও বর্তমান চিত্তেশ্বরী মন্দিরটি বয়সে অপেক্ষাকৃত নবীন। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শ্রী মনোহর ঘোষের নাম উল্লিখিত আছে। বাংলার ডাকাতদের তৈরি প্রাচীন কালীমন্দিরে নরবলির ইতিহাস পাওয়া যায়। কিন্তু ডাকাতের আরাধ্য দেবী দুর্গা আবার সেখানে নরবলির ইতিহাস বিরলতম। চিতু ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত চিত্তেশ্বরী মন্দির এক্ষেত্রে ইতিহাসের এক ব্যতিক্রম। ঐতিহাসিকদের মতে “চিৎপুর রোড কলিকাতার একটা অতি পুরানো পথ। মোগল বাদশাহর আমল থেকেএই পথটার অস্তিত্ব। তখনদিনে ভীষণ জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলেছিলো অপ্রশস্ত বনপথ। এই পথের যাত্রীরা, কাপালিক এবং শাক্ত-সন্ন্যাসীরা, সেই পুরাকালে চিত্রেশ্বরী ঠাকুর দর্শন করে জঙ্গল সমাচ্ছন্ন চৌরঙ্গীর মধ্য দিয়ে কালীঘাট যেতেন যে রাস্তাকে ইংরেজ আমলে 'পিলগ্রিমেজ পাথ' বলা হতো। চিত্রেশ্বরীর নাম থেকেই এই পথটার নাম ‘চিৎপুর’ হয়েছে। বাংলা দেশের সর্বত্র “ডাকাতে কালী” দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু “ডাকাতে দুর্গা” একমাত্র কাশীপুর – চিৎপুর ব্যাতীত কোথাও দেখতে পাওয়া যায়না। চিতু ডাকাত কালীপূজা না করে দুর্গাপূজা করতেন, এটাই ছিল তাঁর বিশেষত্ব। চিতু বা চিতে ডাকাতের সম্পূর্ণ নাম ছিল চিত্তেশ্বর রায় বা চিত্রেশ্বর রায়। সেকালে লোকদের মূর্তিমান বিভীষিকা চিতু ডাকাত আগে চিঠিতে খবর দিয়ে ডাকাতি করতে যেতো আর যাবার আগে দেবী দুর্গার ষোড়শোপচারে পূজা করে নরবলি দিয়ে তারপর সে ডাকাতি করতে পথে বেরোতো৷ আজ যেখানে চিত্তেশ্বরী দেবীর মন্দির অবস্থিত একসময় তার খুব কাছেই ছিল গঙ্গা। এই চিতু ডাকাতের বংশেই পরে রঘু ডাকাতের জন্ম হয়েছিল। ডাকাতির জন্য রঘু ডাকাতের নামও গোটা বাংলায় খ্যাতিলাভ করে আর তাঁর সম্বন্ধেও বহু অলৌকিক কাহিনী আজও প্রবাদের ন্যায় প্রচলিত রয়েছে৷ চিতু ডাকাতের পূজিত দুর্গাদেবীর মুর্তিতে কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখযোগ্য৷ দেবী অসুরদলনী সিংহবাহিনী হলেও, তাঁর দুইপার্শ্বে লক্ষ্মী-সরস্বতী ও কার্ত্তিক-গণেশ নেই। প্রচলিত দুর্গামুর্তিতে কোথাও বাঘ দেখা যায় না। কিন্তু চিতুর দুর্গাপ্রতিমার পাদদেশে একটি বাঘ আছে। প্রাচীনকালে কাশীপুর থেকে কলকাতা যখন জঙ্গলাকীর্ণ অঞ্চল ছিল, তখন ডাকাতেরা বন জঙ্গলে বাঘকে সন্তুষ্ট করার জন্য পূজা করত। চিতু ডাকাতের পূজিতা দেবী দুর্গার নাম হয় চিত্তেশ্বরী ও কাশীপুরের অরণ্য ছিল চিতু ডাকাতের আবাসভূমি তাই তার নাম হয় চিত্রপুর যা কালক্রমে হয়ে ওঠে চিৎপুর৷ যার শুরু আছে, তার শেষও আছে। চিতে ডাকাতের শেষও নির্ধারিত ছিল।সেই সময় চিৎপুরের কাছে দত্ত পদবীর একঘর সম্ভ্রান্ত কায়স্থ বাস করতেন। চক্রপাণি দত্ত বলে সেই পরিবারের একজন নবাবের সেনাপতি ছিলেন।একবার ওই বীর ও দুঃসাহসী চক্রপাণি নিজের পরিবার সমেত নিজের গ্রাম চিৎপুরে আসেন চিত্রেশ্বরী দেবীর পূজা দিতে। সেখানেই তাঁর সাথে চিতে ডাকাতের সংঘর্ষ বাধল।এরপরে চক্রপাণি দত্ত, কোম্পানি আর নবাবের সাথে গোপনে পরামর্শ করে ডাকাত ধরার ব্যবস্থা করলেন। এক রাত্রে তিনি গোপনে গভীর অরণ্যের মধ্যে কোম্পানি আর নবাবের সৈন্য নিয়ে চিতে ডাকাত কে ধরার জন্য প্রস্তুত হলেন আর তার নির্দেশে আচমকা নবাব আর কোম্পানির সশস্ত্র বাহিনী এসে গোটা মন্দির ঘিরে ফেলাতে চিতে ডাকাতের যে সঙ্গীরা বাধা দিতে গেল, তাঁরা সেখানেই মরলো, বাকিরা প্রাণভয়ে পলায়ন করলো।প্রাণভয়ে পালাতে গিয়ে চিতে ডাকাতও ধরা পড়েন আর সেকালের বিধান ও শাস্তি অনুসারে তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। চিতু ডাকাতের পরলোকপ্রাপ্তির পর থেকে দেবী চিত্তেশ্বরীর নিম কাঠের তৈরি বিগ্রহ জঙ্গলে পড়ে রইলো, বন্ধ হল তাঁর পূজাপাঠ। এইভাবে বহুবছর অতিক্রান্ত হবার পরে নৃসিংহ ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক সাধু গঙ্গাতীরে চিৎপুরের বনে সাধনা করতেন। একদিন গভীর রাত্রে দেবী চিত্তেশ্বরী তাঁকে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য স্বপ্নে নির্দেশ দেন। পরে বহু অনুসন্ধান করবার পর দেবীকে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে তাঁর দারুমূর্ত্তিতে পুনরায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। দেবী চিত্তেশ্বরীর মূর্ত্তি উদ্ধারের সময় নৃসিংহ ব্রহ্মচারী দেবীর বক্ষস্থলে আটটি চরণে লেখা দুটি শ্লোক দেখতে পান। তিনি সেই মন্ত্রে দেবীর পূজা করেন এবং আজও সেই গুপ্ত মন্ত্রে চিতু ডাকাতের পূজিতা চিত্তেশ্বরী দুর্গাদেবীর পুজো হয়ে থাকে।
ছবি©অরূপ কুমার দে ইতিহাসের বেশীরভাগ তথ্য নীচে উল্লেখিত বইগুলো থেকে পাওয়া৷ #আরও বিশদভাবে জানতে হলে নীচে দেওয়া বইগুলো পড়ে দেখতে পারেন৷ ১) বাংলার ডাকাত, যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত, কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান৷ ২) বাংলার ডাকাত, ধীরেন্দ্রলাল ধর, দে’জ পাবলিশিং৷ ৩)বাংলার ডাকাত, খগেন্দ্রনাথ মিত্র। © লেখা --...
Read moreচিত্তেশ্বরীদুর্গামন্দিরচিৎপুর৷
আদি চিত্তেশ্বরী দুর্গা মন্দিরটা কলকাতার কাশীপুরের ‘গান-অ্যান্ড-শেল’ কারখানার পাশে অবস্থিত। জনশ্রুতি যে প্রাচীন কলকাতার চিৎপুর (‘চিত্রপুর’) অঞ্চলের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন ‘চিত্তেশ্বরী’/’চিত্রেশ্বরী’। আনুমানিক প্রায় আঠশো বছর আগে #চিতু ডাকাত এই দেবীপূজা শুরু করেন৷ দেবীমূর্তি প্রাচীন হলেও বর্তমান চিত্তেশ্বরী মন্দিরটি বয়সে অপেক্ষাকৃত নবীন। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শ্রী মনোহর ঘোষের নাম উল্লিখিত আছে। বাংলার ডাকাতদের তৈরি প্রাচীন কালীমন্দিরে নরবলির ইতিহাস পাওয়া যায়। কিন্তু ডাকাতের আরাধ্য দেবী দুর্গা আবার সেখানে নরবলির ইতিহাস বিরলতম। চিতু ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত চিত্তেশ্বরী মন্দির এক্ষেত্রে ইতিহাসের এক ব্যতিক্রম। ঐতিহাসিকদের মতে “চিৎপুর রোড কলিকাতার একটা অতি পুরানো পথ। মোগল বাদশাহর আমল থেকেএই পথটার অস্তিত্ব। তখনদিনে ভীষণ জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলেছিলো অপ্রশস্ত বনপথ। এই পথের যাত্রীরা, কাপালিক এবং শাক্ত-সন্ন্যাসীরা, সেই পুরাকালে চিত্রেশ্বরী ঠাকুর দর্শন করে জঙ্গল সমাচ্ছন্ন চৌরঙ্গীর মধ্য দিয়ে কালীঘাট যেতেন যে রাস্তাকে ইংরেজ আমলে 'পিলগ্রিমেজ পাথ' বলা হতো। চিত্রেশ্বরীর নাম থেকেই এই পথটার নাম ‘চিৎপুর’ হয়েছে। বাংলা দেশের সর্বত্র “ডাকাতে কালী” দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু “ডাকাতে দুর্গা” একমাত্র কাশীপুর – চিৎপুর ব্যাতীত কোথাও দেখতে পাওয়া যায়না। চিতু ডাকাত কালীপূজা না করে দুর্গাপূজা করতেন, এটাই ছিল তাঁর বিশেষত্ব। চিতু বা চিতে ডাকাতের সম্পূর্ণ নাম ছিল চিত্তেশ্বর রায় বা চিত্রেশ্বর রায়। সেকালে লোকদের মূর্তিমান বিভীষিকা চিতু ডাকাত আগে চিঠিতে খবর দিয়ে ডাকাতি করতে যেতো আর যাবার আগে দেবী দুর্গার ষোড়শোপচারে পূজা করে নরবলি দিয়ে তারপর সে ডাকাতি করতে পথে বেরোতো৷ আজ যেখানে চিত্তেশ্বরী দেবীর মন্দির অবস্থিত একসময় তার খুব কাছেই ছিল গঙ্গা। এই চিতু ডাকাতের বংশেই পরে রঘু ডাকাতের জন্ম হয়েছিল। ডাকাতির জন্য রঘু ডাকাতের নামও গোটা বাংলায় খ্যাতিলাভ করে আর তাঁর সম্বন্ধেও বহু অলৌকিক কাহিনী আজও প্রবাদের ন্যায় প্রচলিত রয়েছে৷ চিতু ডাকাতের পূজিত দুর্গাদেবীর মুর্তিতে কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখযোগ্য৷ দেবী অসুরদলনী সিংহবাহিনী হলেও, তাঁর দুইপার্শ্বে লক্ষ্মী-সরস্বতী ও কার্ত্তিক-গণেশ নেই। প্রচলিত দুর্গামুর্তিতে কোথাও বাঘ দেখা যায় না। কিন্তু চিতুর দুর্গাপ্রতিমার পাদদেশে একটি বাঘ আছে। প্রাচীনকালে কাশীপুর থেকে কলকাতা যখন জঙ্গলাকীর্ণ অঞ্চল ছিল, তখন ডাকাতেরা বন জঙ্গলে বাঘকে সন্তুষ্ট করার জন্য পূজা করত। চিতু ডাকাতের পূজিতা দেবী দুর্গার নাম হয় চিত্তেশ্বরী ও কাশীপুরের অরণ্য ছিল চিতু ডাকাতের আবাসভূমি তাই তার নাম হয় চিত্রপুর যা কালক্রমে হয়ে ওঠে চিৎপুর৷ যার শুরু আছে, তার শেষও আছে। চিতে ডাকাতের শেষও নির্ধারিত ছিল।সেই সময় চিৎপুরের কাছে দত্ত পদবীর একঘর সম্ভ্রান্ত কায়স্থ বাস করতেন। চক্রপাণি দত্ত বলে সেই পরিবারের একজন নবাবের সেনাপতি ছিলেন।একবার ওই বীর ও দুঃসাহসী চক্রপাণি নিজের পরিবার সমেত নিজের গ্রাম চিৎপুরে আসেন চিত্রেশ্বরী দেবীর পূজা দিতে। সেখানেই তাঁর সাথে চিতে ডাকাতের সংঘর্ষ বাধল।এরপরে চক্রপাণি দত্ত, কোম্পানি আর নবাবের সাথে গোপনে পরামর্শ করে ডাকাত ধরার ব্যবস্থা করলেন। এক রাত্রে তিনি গোপনে গভীর অরণ্যের মধ্যে কোম্পানি আর নবাবের সৈন্য নিয়ে চিতে ডাকাত কে ধরার জন্য প্রস্তুত হলেন আর তার নির্দেশে আচমকা নবাব আর কোম্পানির সশস্ত্র বাহিনী এসে গোটা মন্দির ঘিরে ফেলাতে চিতে ডাকাতের যে সঙ্গীরা বাধা দিতে গেল, তাঁরা সেখানেই মরলো, বাকিরা প্রাণভয়ে পলায়ন করলো।প্রাণভয়ে পালাতে গিয়ে চিতে ডাকাতও ধরা পড়েন আর সেকালের বিধান ও শাস্তি অনুসারে তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। চিতু ডাকাতের পরলোকপ্রাপ্তির পর থেকে দেবী চিত্তেশ্বরীর নিম কাঠের তৈরি বিগ্রহ জঙ্গলে পড়ে রইলো, বন্ধ হল তাঁর পূজাপাঠ। এইভাবে বহুবছর অতিক্রান্ত হবার পরে নৃসিংহ ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক সাধু গঙ্গাতীরে চিৎপুরের বনে সাধনা করতেন। একদিন গভীর রাত্রে দেবী চিত্তেশ্বরী তাঁকে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য স্বপ্নে নির্দেশ দেন। পরে বহু অনুসন্ধান করবার পর দেবীকে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে তাঁর দারুমূর্ত্তিতে পুনরায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। দেবী চিত্তেশ্বরীর মূর্ত্তি উদ্ধারের সময় নৃসিংহ ব্রহ্মচারী দেবীর বক্ষস্থলে আটটি চরণে লেখা দুটি শ্লোক দেখতে পান। তিনি সেই মন্ত্রে দেবীর পূজা করেন এবং আজও সেই গুপ্ত মন্ত্রে চিতু ডাকাতের পূজিতা চিত্তেশ্বরী দুর্গাদেবীর...
Read moreVery peaceful and powerful place. There is a panch munda asana just behind the temple. There are temples dedicated to Maa Shitala , Sri Krishna. Inside the Sri Krishna temple one can see holy implements for tantric worship. The temple is not maintained well maybe because of limited visits . There were human sacrifices at one time . The place for such sacrifice can still be seen between the Ma Durga temple and Naat mansur the Shiva Lingam is very large and comically shaped on the top. Very rare lingam and myst have been used for special tantric rites. Practitioners of tantra method should visit the temple regularly. Perhaps with their continual usage of the panch munda asana it will regain its strength. The Pandit who tends the temple is a very shy and quiet man. Devotees and interested persons should visit the temple regularly and Ma permitting it will again become a major centre for shakti worship. Many devotees would have attained darshan here. The magic associated with such places still exists here. The Ma Shitala temple , The Durga temple , the Ram Sita temple , the Shiva lingam are power spots which need to be revived with...
Read more